Wellcome to National Portal
বাংলাদেশ সুগারক্রপ গবেষণা ইনস্টিটিউট গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার
Text size A A A
Color C C C C

সর্ব-শেষ হাল-নাগাদ: ১০ সেপ্টেম্বর ২০২৩

কীটতত্ত্ব বিভাগ

      বাংলাদেশের অর্থকরী ফসল সমূহের মধ্যে আখ অন্যতম, যা চিনি ও গুড় উৎপাদনের প্রধান কাঁচামাল। শুধু চিনি বা গুড় উৎপাদনই নয়, আমাদের দেশে চিবিয়ে খাওয়ার জন্য আখের ব্যাপক চাহিদা বিদ্যমান। আখ ফসল উৎপাদনে বিভিন্ন রকমের প্রতিবন্ধকতা রয়েছে যার মধ্যে পোকামাকড়ের আক্রমণ অন্যতম। বাংলাদেশে গুড় উৎপাদন ও চিনি আহরণের হার পৃথিবীর অন্যান্য দেশের তুলনায় কম। শুধু পোকামাকড়ের কারণেই প্রতি বছর গড়ে ২০% উৎপাদন এবং ১৫% চিনি আহরণ হ্রাস পায়।আখ রোপণ থেকে শুরু করে কর্তন পর্যন্ত এই দীর্ঘ ১২/১৪ মাস সময়ে ঐ সমস্ত পোকামাকড় আখের ব্যাপক ক্ষতিসাধন করে থাকে। আবহাওয়ার তারতম্যের কারণে কোন কোন বছর বিশেষ কোন পোকার ব্যাপক আক্রমণ পরিলক্ষিত হয় এবং ফলরেনর উপর সাংঘাতিকভাবে বিরূপ প্রতিক্রিয়া দেখা যায়।

      বাংলাদেশ সুগারক্রপ গবেষণা ইনষ্টিটিউট আখের উন্নত জাত উদ্ভাবনের গবেষণা ছাড়াও আখ ফসলের উন্নয়ন ও পোকামাকড় থেকে রক্ষার জন্য বিভিন্ন রকম গবেষণা করে থাকে। পোকামাকড় দমনের জাতীয় চাহিদা মেটাতে ১৯৭৯ সাল থেকে ইক্ষু গবেষণায় কীটতত্ত্ব বিভাগের গবেষণার দ্বারা উন্মুক্ত হয়। বাংলাদেশে এ পর্যন্ত দুইটি মাকড়সহ ৭০টি ক্ষতিকর পোকামাকড় সনাক্ত করা হয়েছে, এদের মধ্যে ১০টি অতি মারাত্মক। আখের জমিতে উপকারী পোকামাকড়ের সংখ্যা ৫০টি; এরা প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে আখ চাষীদের উপকার করে থাকে। গবেষণার বিভিন্ন দিকের মধ্যে ক্ষতিকর ও উপকারী পোকামাকড় সনাক্তকরণ, ক্ষতির ধরণ, আক্রমনের লক্ষণ, ক্ষতির পরিমান বিবেচনা করে পোকাগুলোকে মুখ্য, গৌণ ভাগে ভাগ, তাদের জীবচন বৃত্তান্ত ও প্রজনন সংখ্যা, মৌসুমি প্রাচুর্যতা প্রভৃতি নিরূপণ করা। তবে কীটতত্ত্ব বিভাগের মূল কাজ বিভিন্ন পদ্ধতিতে ক্ষতিকর পোকামাকড় দমনের উপর গবেষণা পরিকল্পনা প্রণয়ন ও বাস্তবায়নের মাধ্যমে দমন বিষয়ক প্রযুক্তি উদ্ভাবন করা। কীটতত্ত্ব বিভাগ আখ ছাড়াও সুগারবিট, তাল ও খেজুর গাছের পোকামাকড় দমন ব্যবস্থাপনার উপর গবেষণা পরিচালনা করে থাকে। প্রধান প্রধান দমন পদ্ধতিগুলোর মধ্যে

১) সনহনশীল জাতের চাষাবাদ

২) কৃষিতাত্বিক দমন ব্যবস্থা

৩) যান্ত্রিক দমন ব্যবস্থা

৪) জৈবিক দমন ব্যবস্থা এবং

৫) সর্বশেষ করণীয় হিসেবে রাসায়নিক কীটনাশকের সাহায্যে দমন ব্যবস্থা।

     এ ছাড়াও উদ্ভিজ্জ উপকরণ, ফেরোমন ট্যাপ এবং অনুজীবের সাহায্যে পোকামাকড় দমন ব্যবস্থার গবেষণা কার্যক্রম প্রণয়ন করা হয়ে থাকে। সর্বোপরি, পোকামাকড়ের সমন্বিত দমন ব্যবস্থাপনার উপর গবেষণা করে থাকে। আখ চাষী, বিএসএফআইসি/চিনিকল কর্তৃপক্ষ এবং কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের আহবানে আখের মাঠ পরিদর্শন ও পোকামাকড় নিয়ন্ত্রণে সুপারিশ প্রণয়ন কীটতত্ত্ব বিভাগের কাজ। চাষী, সম্প্রসারণ কর্মী ও সম্প্রসারণ কর্মকর্তাসহ ও সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন শ্রেণী/পেশার লোককে সমন্বিত পোকামাকড় দমন ব্যবস্থাপনা বিষয়ে প্রশিক্ষণ প্রদান ও গবেষণালব্ধ ফলাফল তথা সুপারিশসমূহ লিফলেট, বুকলেট, প্রতিবেদন ও বৈজ্ঞানিক প্রবন্ধ আকারে জার্নালে প্রকাশ করাও কীটতত্ত্ব বিভাগের কার্যক্রমের আওতাভূক্ত।