বাংলাদেশ ইক্ষু গবেষণা ইনস্টিটিউটের বার্ষিক গবেষণা কর্মসূচী কয়েকটি ধাপে সম্পন্ন হয়। প্রতি বছর বার্ষিক গবেষণা কর্মসূচী প্রণয়নের পূর্বে ‘গবেষণা-সম্প্রসারণ’ কর্মশালার আয়োজন করা হয়। কর্মশালায় ইক্ষুচাষ বিষয়ক সমস্যা চিহ্নিত করা হয় এবং গবেষণার জন্য সুপারিশ প্রণীত হয়। বিজ্ঞানীগণ তাদের নিজস্ব অভিজ্ঞতা এবং গবেষণা-সম্প্রসারণ কর্মশালায় প্রণীত সুপারিশ এর আলোকে নিজ নিজ গবেষণা কর্মসূচী প্রণয়ন করেন। এরপর ঐ গবেষণা কর্মসূচীগুলি স্ব-স্ব ক্ষেত্রের বিশেষজ্ঞ এবং উর্দ্ধতন বিজ্ঞানীগণ পর্যালোচনা করেন। এ পর্যালোচনা কর্মশালায় বিজ্ঞানীগণ একই ধরনের অন্যান্য গবেষণার ফলাফল এবং তথ্যসূত্রও উপস্থাপন করেন। এভাবেই দীর্ঘ আলোচনা-সমালোচনা ও প্রয়োজনীয় সংযোজন পরিমার্জনের পর গবেষণা কর্মসূচী চূড়ান্ত হয়। বিএসআরআই তার গবেষণা কর্মসূচী পর্যালোচনার জন্য সাধারণত বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয় (যেমন বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়, খুলনা বিশ্ববিদ্যালয় ইত্যাদি), গবেষণা প্রতিষ্ঠান (যেমন বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউট, বাংলাদেশ ধান গবেষণা ইনস্টিটিউট, বাংলাদেশ পাট গবেষণা ইনস্টিটিউট, বাংলাদেশ আনবিক কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউট, বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা কাউন্সিল প্রভৃতি), সম্প্রসারণ প্রতিষ্ঠান (যেমন কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর, বাংলাদেশ চিনি ও খাদ্য শিল্প সংস্থা, বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন কর্পোরেশন, বেসরকারী উন্নয়ন সংস্থাসমূহ প্রভৃতি) এবং বিভিন্ন বেসরকারী প্রতিষ্ঠানের নির্দিষ্ট বিষয়ে বিশেষজ্ঞ এবং উর্দ্ধতন গবেষকবৃন্দকে আমন্ত্রণ জানায়। চূড়ান্ত গবেষণা কর্মসূচী প্রণীত হবার পর সেটা বাস্তবায়নের দায়িতব পড়ে উদ্যোক্তা/নির্দিষ্ট করে দেয়া কোন বিজ্ঞানীর উপর। বিএসআরআই এর প্রধান গবেষণা ক্ষেত্রসমূহ নিম্নরূপঃ
গবেষণা ক্ষেত্রসমূহ |
অংশগ্রহণকারী বিভাগ/ডিপার্টমেন্ট |
---|---|
১। ইক্ষুর জাত উন্নয়ন |
ইক্ষু প্রজনন, শারীরততব, চিনি রসায়ন, সরেজমিন গবেষণা, মৃত্তিকা বিজ্ঞান, পরিসংখ্যান, কৃষি অর্থনীতি, বীজ প্রযুক্তি, খামার যন্ত্রায়ন, রোগততব, কীটততব, কৃষিততব, বায়োটেকনোলজি, সেচ ও পানি ব্যবস্থাপনা |
২। ইক্ষু প্রজননের দক্ষতা বৃদ্ধিকল্পে কৌশলগত গবেষণা |
ইক্ষু প্রজনন, শারীরততব, চিনি রসায়ন, রোগততব, বীজ প্রযুক্তি ও বায়োটেকনোলজি |
৩। কৃষিতাত্ত্বিক ব্যবস্থাপনা |
কৃষিতত্ব, রোগতত্ব, ইক্ষু প্রজনন, কীটতত্ব, বীজ প্রযুক্তি, কৃষি অর্থনীতি, খামার যন্ত্রায়ন, সেচ ও পানি ব্যবস্থাপনা, মৃত্তিকা বিজ্ঞান, চিনি রসায়ন, সরেজমিন গবেষণা, শারীরতত্ব, পরিসংখ্যান ও প্রশিক্ষণ |
৪। মৃত্তিকা উর্বরতা ব্যবস্থাপনা |
মৃত্তিকা বিজ্ঞান, কৃষিতত্ব, শারীরতত্ব, সরেজমিন গবেষণা |
৫। পোকা ও বালাই ব্যবস্থাপনা |
কীটতত্ব, রোগতত্ব, কৃষিতত্ব, শারীরতত্ব, চিনি রসায়ন, ইক্ষু প্রজনন, বায়োটেকনোলজি |
৬। রোগ ব্যবস্থাপনা |
রোগততব, মৃত্তিকা বিজ্ঞান, শারীরততব, কীটততব, ইক্ষু প্রজনন, কৃষিততব ও কৃষি অর্থনীতি |
৭। চিনি ও গুড় প্রক্রিয়াজাতকরণ |
চিনি রসায়ন, বায়োটেকনোলজি, সরেজমিন গবেষণা, খামার যন্ত্রায়ন ও কৃষি অর্থনীতি |
৮। ইক্ষুর কো-প্রোডাক্ট এর ব্যবহার |
চিনি রসায়ন, কৃষিততব, বায়োটেকনোলজি, সরেজমিন গবেষণা, খামার যন্ত্রায়ন, রোগততব, শারীরততব ও মৃত্তিকা বিজ্ঞান |
৯। সহায়ক অন্যান্য মিষ্টিজাতীয় ফসল উন্নয়ন |
শারীরততব, চিনি রসায়ন, খামার যন্ত্রায়ন, কৃষিততব, বায়োটেকনোলজি, সেচ ও পানি ব্যবস্থাপনা, সরেজমিন গবেষণা, কৃষি অর্থনীতি, মৃত্তিকা বিজ্ঞান, পরিসংখ্যান ও প্রশিক্ষণ |
১০। কৃষি অর্থনীতি ও প্রযুক্তি হস্তান্তর |
সরেজমিন গবেষণা, কৃষি অর্থনীতি, প্রশিক্ষণ ও কৃষিততব |
১১। বায়োটেকনোলজি ও অগ্রবর্তী (frontier) গবেষণা |
ইক্ষু প্রজনন, শারীরততব ও চিনি রসায়ন, রোগততব ও কীটততব |
এ ছাড়াও এ ইনস্টিটিউট আরো কিছু কর্মসূচী বাস্তবায়ন করে যেমন সরেজমিন গবেষণা, প্রদর্শনী প্রভৃতি। এগুলি ছাড়াও বিএসআরআই তার প্রযুক্তি বিস্তারের জন্য আয়োজন করে ইক্ষুচাষী এবং চাষী প্রশিক্ষকদের জন্য প্রশিক্ষণ, সেমিনার, সিম্পোজিয়াম, কৃষক সমাবেশ, মাঠ দিবস, প্রভৃতি; প্রকাশ করে বই, প্রতিবেদন, ম্যানুয়াল, ফোল্ডার, লিফলেট এবং অন্যান্য প্রকাশনাসমূহ।